মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

রাষ্ট্রের দেয়া আত্মসমর্পনের সুযোগ নিয়ে হয় দ্রুত আত্মসমর্পণ করো, না হয় কঠোর আইনী পদক্ষেপ নিয়ে ভয়াবহ শেষ পরিণতির জন্য প্রস্তুত হও। উল্লেখিত দু’টি পথ ছাড়া বিকল্প কোন পথ তাদের জন্য আর খোলা নেই। ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজদের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম কক্সবাজার নিউজ সিবিএন-কে বুধবার ৩ এপ্রিল দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে একথা বলেন।

মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের নেয়া ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করে চলমান মাদক বিরোধী অভিযান ক্ষিপ্র থেকে আরো ক্ষিপ্রতর করা হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন-আইনের জালে সকল ইয়াবাবাজদের পড়তেই হবে। তিনি ‘চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন’ প্রবাদ বাক্যটি উল্লেখ করে বলেন-কেউ যদি মনে করে ইয়াবাবাজী করে পার পেয়ে যাবে, সেটা অবশ্যই ভুল ধারণা। প্রায় সকল ইয়াবাবাজের সুস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট ও যাচাইকৃত তথ্য উপাত্ত এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে রয়েছে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ ইয়াবাবাজদের গতিবিধি এখন কক্সবাজার জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তাই রাষ্ট্রের প্রদত্ত আত্মসমর্পণের সুযোগ নিয়ে ইয়াবাবাজদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন-যারা ইয়াবাবাজী করেছে  অথবা করছে, অথচ এখনো আত্মসমর্পণ করছেনা, তারা আইনের কঠোর প্রয়োগের কবলে পড়ে অনিবার্য ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবেন।

পুলিশ বাহিনীর জন্য সাহসিকতায় রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্চ সম্মানজনক পদক বিপিএম সম্মাননা পাওয়া পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন আরো বলেন-পুরাতন ইয়াবাবাজেরা বুঝতে পেরে এ ব্যবসা থেকে ধীরে ধীরে নিজেদের প্রায় গুটিয়ে নেয়ার সুযোগে নতুন নতুন সিন্ডিকেট এখন ইয়াবাবাজীতে জড়িত হয়ে নতুন পন্থায় ইয়াবাবাজীর অপচেষ্টা করছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য আসছে। যদি কেউ জেনেশুনে ইয়াবাবাজীর মতো জঘন্য পেশায় নিজেকে নতুন করে জড়াতে চায়, তাদের উপরও আইনের কঠোর ও ভয়াবহ প্রয়োগের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন-আইনের চোখ খুবই দূরদর্শী, কেউ আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে নতুন করে ইয়াবাবাজীতে জড়াতে অপচেষ্টা করলে, সেটা হবে তাদের জন্য মারাত্মক ভূল। মাদক বিরোধী চলমান সাড়াশি অভিযানে কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দেয়ার কোন অবকাশ নেই।

এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন-সব ধরণের মাদক ব্যবসায়ীরা দেশ ও জণগনের শত্রু। এ শত্রুদের শেকড় সহ নির্মূল করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। তাই যেকোন মূল্যে ইয়াবাবাজ, হুন্ডিবাজ সহ তাদের ব্যবসার সবরকম উপাদান ও সহযোগীদের মূল উৎপাটনে কক্সবাজার জেলা পুলিশ যেকোন ত্যাগ স্বীকারে সর্বদা প্রস্তুত। তিনি বলেন-ইয়াবাবাজ, হুন্ডিবাজদের অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ শুধু তাদের সন্তান নয়, তাদের পরবর্তী কয়েক প্রজন্মও তা ভোগ করতে পারবেনা। অবৈধপন্থায় ইয়াবাজদের অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করার আইনী প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রের এ ম্যাসেজ গুলো ইয়াবাবাজদের সহজে বুঝে নিয়ে সময় পুরিয়ে যাবার আগেই যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সঠিক পথে পা বাড়ানোর জন্য তিনি ইয়াবাবাজদের আহবান জানান।

এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম দ্বিতীয় দফায় ইয়াবাবাজদের কখন আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হবে-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন-ইয়াবাবাজদের আত্মসমর্পনের বিষয়ে রাষ্ট্রের উর্ধ্বতন মহলের ‘গ্রীণ সিগন্যাল’ রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আরো কিছু বিস্তারিত জানাবার সময় এখনো হয়নি বলে তিনি সিবিএন-কে জানান।